এক গর্ভবতী নারীকে তার বিশেষ দিনের জন্য তৈরি থাকতে যা সাহায্য করে তা আশীর্বাদের চেয়ে কম কিছুই নয়। আমরা এটা জানি। তাই চলুন, আমরা কথা বলি কিগেল-এর বিষয়ে! এই অদ্ভুত ব্যায়াম যে কোন মহিলার জন্য খুবই উপকারী, তা তিনি গর্ভবতী হন, বা আগে জন্ম দিয়ে থাকুন, বা বাচ্চার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার পর্যায় থাকুন।
কেগেল ব্যায়াম কি?
কিগেল ব্যায়াম, বা পেল্ভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ, আপনার শ্রোণীর পেশিগুলিকে শক্ত করে তোলে, অর্থাৎ যে পেশীগুলি আপনার জরায়ু, মূত্রথলি, আর অভ্যন্ত্রের ভারবহন করে। কিগেল ব্যায়াম আপনার যোনীর পেশীকে শক্তি দেয়। এই পেশীগুলো আপনার মূত্রের প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করে আর শ্রোণীর অঙ্গগুলি জায়গায় রাখতে সাহায্য করে।
এই ব্যায়াম কেন করবেন?
গর্ভাবস্থার সময় শ্রোণীর পেশীশক্তি বাড়ালে তা আপনার জন্মদানের প্রক্রিয়ার সময় পেশী নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। এই পেশীগুলির স্বাস্থ্য বজায় রাখলে গর্ভাবস্থার সঙ্গে জড়িত দুটি প্রধান সমস্যাকে লঘু করে তোলে – মূত্রথলির নিয়ন্ত্রণে অসুবিধা এবং হেমরয়েড্স। কিগেল ব্যায়াম সাধারণত জন্মদানের পরে সুপারিশ করা হয়, কারণ এটি মূত্রথলির নিয়ন্ত্রণ ফেরাতে ও পেরিনিয়ামকে সাধারণ অবস্থায় ফেরত নিয়ে যেতে সাহায্য করে। এর বিষয়ে সবচেয়ে সুবিধার জিনিস হল এই যে এগুলি যে কোন সময়, যে কোন জায়গায় করা যায়, এবং কেউ জানতেও পারে না।
কিভাবে এটি করবেন?
এই ব্যায়ামের প্রাথমিক পর্যায় হল আপনার প্রস্রাব ধরে রাখার ভান করা। আপনার যোনীর পেশীগুলিকে ১০ সেকন্ডের জন্য সঙ্কুচিত করুন, তারপর আসতে আসতে শিথিল করে দিন। মাঝে মাঝে লোকে ভুল পেশীর ওপর চাপ দেয়, যার ফলে এই ব্যায়ামের কোন সুফল পাওয়া যায় না। পেশী সটান করার সময় আপনি নিজের যোনীর মধ্যে আঙুল দিয়ে দেখতে পারেন যে আঙুলের ওপর চাপ পড়ছে কি না। যখন আপনি বুঝতে পারবেন আপনার শ্রোণীর বা “পেল্ভিক ফ্লোর”-এর পেশী কোনটা, তখন চেষ্টা করুন সেটাকে ৫-১০ সেকন্ড সঙ্কুচিত করে রাখতে, এবং তার পরে শিথিল করে দিন। এটা ১০-২০ বার করুন। চেষ্টা করবেন যেন শরীরের বাকী সব পেশী, যেমন পেট বা ঊরুর পেশী, সম্পূর্ণ শিথিল থাকে আপনার যোনীর পেশী সঙ্কুচন করানোর সময়। এটা মূত্রথলি খালি থাকলে করবেন, এবং পুরো ব্যায়ামের সময় স্বাভাবিক নিশ্বাস-প্রশ্বাস বজায় রাখবেন।
কতক্ষণ করবেন?
প্রথমে দিনে দুবার করে করুন, প্রত্যেকবার ৫ মিনিট করে। অভ্যাসের সাথে ব্যায়ামের সময় বেড়ে ১০-১৫ মিনিট হয়ে যেতে পারে, এবং সঙ্কুচনের সময় বেড়ে ১৫ সেকন্ড হতে পারে। ভালো ফলাফলের জন্য আমাদের উপদেশ হল - এই ব্যায়ামেরর জন্য রোজ আলাদা করে সময় রাখুন।
এটা কোথায় করতে পারি?
বাড়িতে বই পড়তে পড়তে, ট্র্যাফিক সংকেতে আটকে থাকার সময়, হাসপাতালের অপেক্ষার ঘরে, বা যেখানে খুশী! যেহেতু কেউ বুঝতে পারবেন না যে আপনি এই ব্যায়াম করছেন, আপনি নিজের সুবিধা মতো জায়গা ও সময় বেছে নিতে পারেন।
এই সমস্তই বলার ছিল কিগেল ব্যায়ামের বিষয়ে। আশা করি আপনারা এগুলো রোজকার জীবনের মেনে চলতে পারবেন, এবং আরো স্বাস্থ্যবান জন্মদানের দিকে এগিয়ে যাবেন। আপনাদের কি আর কোন ধারণা যোগ করার আছে এর সঙ্গে? আমাদের জানাতে ভুলবেন না!